ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদনের নিয়ম/পদ্ধতি/করনীয়:
আসুন ফর্ম পুরণ করা যাক:
প্রথমে চলুন যাই: http://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa/ ঠিকানায়। আগে বিস্তারিত ভাল করে পড়ুন। তারপর Online Visa Application Form এর উপর ক্লিক করুন। পেজটি ভাল করে পড়ুন, এরপর Online Visa Application Registration বাটনে ক্লিক করুন।
নতুন একটি ট্যাবে ফর্ম চালু হবে। উপর থেকে প্রথমেই Temporary Application ID কপি করে রাখুন।
সিলেক্ট করুন Indian Mission. যারা খুলনা-সিলেট-ঢাকা-বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা তারা “Bangladesh-Dhaka” নির্বাচন করুন, এবং আপনারা আপনাদের ফর্ম ঢাকায় জমা দিতে পারবেন, কিন্তু নিজ বিভাগের(খুলনা-সিলেট) অফিসেও জমা দিতে পারবেন, ঢাকাতে জমা দিলে ফি নিবে ৪০০টাকা এবং ২দিনের মধ্যেই ভিসা পাবেন, আর খুলনায় জমা দিলে ৭-১৪দিন সময় লাগবে এবং ৬০০টাকা লাগবে, আমি সিলেট সম্পর্কে সঠিক জানি না তবে যতটুকু জানি সিলেট অফিসও খুলনা অফিসের মত। আসলে খুলনা এবং সিলেটের থেকে সরাসরি ভিসা দেওয়া হয়না, এখান থেকে ফর্ম নিয়ে ওরা ঢাকায় পাঠায়, ঢাকা থেকে ভিসা আসে খুলনা ও সিলেটে। তবে ঢাকার+বরিশালের বাসিন্দাগন অবশ্যই ঢাকাতে জমা দিতে হবে। http://www.ivacbd.com / ওয়েবসাইটে আপনার বিভাগীয় অফিসের ঠিকানা পাবেন।
* ফর্ম এর ভিতরে একটা ফিল্ড আছে যেখানে ওরা জানতে চেয়েছে যে আপনার দাদা-নানা কেউ কি পাকিস্তানে ছিলেন কিনা, দয়া করে এখানে No দিন, না হলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
* ফর্ম পুরণ শেষে যদি Appointment তারিখ না আসে, তাহলে ১০-১২ ঘন্টা পর http://indianvisaonline.gov.in/visa/ ওয়েবসাইটে গিয়ে Appointment তারিখ নিন, যদি না পান, তাহলে আবারও ১২ ঘন্টা পর ট্রাই করুন। আমি নিজে ১২ ঘন্টা পর পেয়েছিলাম।
* ফর্ম এর একটি ফিল্ডে ভারতে আছেন এমন একজনের ঠিকানা দিতে হবে, যদি আপনার কেউ না থাকে , তাহলে নেটে সার্চ করে যে কোন একটা হোটেলেই নাম+ঠিকানা+ফোন নাম্বার দিয়ে দিন, আর এই তথ্যটি মনে রাখুন, এটি ভারতে প্রবেশের সময় জিজ্ঞাসা করতে পারে।
* ফর্ম পুরণ করার সময় আপনাকে উল্লেখ করে দিতে হবে যে আপনি কোন বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবেন? এবং শুধুমাত্র আপনার নির্বাচিত বর্ডারদিয়েই আপনি প্রবেশকরতেও ফিরতে পারবেন। আগে থেকে গুগল ম্যাপ সার্চ করে যেনে নিন, আমি দর্শনা দিয়ে যাব, কিন্তু এখানকার ভারতীয় বর্ডার এর নাম জানতাম না, গুগল ম্যাপ ঘেটে বের করলাম যে এখানকার ভারতীয় বর্ডার হলো GEDE, তারপর তাই নির্বাচিত করলাম।
যে সমস্ত কাগজ-পত্র লাগবে নিম্নে আমি সেগুলির তালিকা দিলাম:
১. অনলাইনে আবেদনের অরিজিনাল কপি। অবশ্যই দুইটি আলাদা A4 পৃষ্ঠায় একপিঠ করে প্রিন্ট করবেন।
*(আবেদন পত্রের উপরের ডানদিকে সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড যুক্ত 2”x2”সাইজের ছবি আঠা দিয়ে লাগাতে হবে, তার নিচে ও দ্বিতীয় পৃষ্ঠার শেষে সাইন করতে হবে, সাইনটি অবশ্যই পাসপোর্টের সাইনের সাথে মিল থাকতে হবে।)
২. সর্বশেষ ৩ মাস বা তার অধিক সময়ের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ফটোকপি এবং অরিজিনাল কপি দিতে হবে, অরিজিনাল কপির উপর অবশ্যই ব্যাংক এর সিল থাকতে হবে, এবং উক্ত স্থানে ব্যাংক এর যোগাযোগ ফোন নম্বার থাকতে হবে। ব্যাংক স্টেটমেন্ট এ অবশ্যই ১৬-২০ হাজার টাকার সর্বশেষ ব্যালেন্স দেখাতে হবে। পারলে আরও বেশী দেখালে ভাল হয়, ১৬০০০টাকার নিচে ব্যালেন্স থাকলে ভিসা নাও পেতে পারেন!
*অরিজিনাল ব্যাংক স্টেটমেন্টটি পাসপোর্টের শেষ পাতার সাথে স্ট্যাপলিং করে দিতে হবে, এবং এটি ভিসার সাথে ফেরৎ পাবেন।
৩. জন্ম নিবন্ধন+জাতীয় পরিচয় পত্র+নাগরিক সনদ এর ফটোকপি দিবেন।
৪. ঠিকানার সত্যতার প্রমানের জন্য বিগত ৩ মাসের যে কোন একটি ইউটিলিটি (বিদ্যুত/পানি/টেলিফোন) বিলের ফটোকপি দিবেন, আমি বিদ্যুত বিলের ফটোকপি দিয়েছিলাম।
৫. আপনার পাসপোর্ট এর প্রথম ৮ পৃষ্ঠা(১ম থেকে ভিসার পাতা পর্যন্ত) ও শেষ পৃষ্ঠার ফটোকপি দিবেন।
কয়েকটি বিষয় না জানলেই নয়:
ক. আপনি যদি মেডিকেল ভিসার আবেদন করেন, তবে পেপারস জমা দেওয়ার সাথে মেডিকেলের পেপার্স গুলাও জমা দিতে হবে, এতে সমস্যাও আছে, আপনি মেডিকেলের জন্য আবেদন করলে ওরা আপনাকে পুরা তিন মাসের ভিসা দিবে না, ১৫ দিন থেকে ২ মাসের ভিসা দিবে, কিন্তু যদি আপনি টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করেন, তাহলে আপনাকে ওরা সহজেই ভিসা দিবে, এবং পুরা ৩ মাসেরই ভিসা দিবে। তরে টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা যায় না।
খ. আপনার ফর্ম এর কোন তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন না, আবার Appointment Date শেষ না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নতুন করে আবেদন ও করতে পারবেন না, যদি কোন তথ্য ভুল হয়ে যায় , তাহলে Appointment Date এর পরের দিন আবার নতুন করে আবেদন করুন।
গ. ফর্ম জমা দেওয়ার অফিসে আপনাকে কোন প্রকার ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করতে দিবে না, তাই একটা ফাইলে করে কাগজ-পত্র নিয়ে যাবেন, ফাইল নিয়ে প্রবেশ করতে দিবে।
ঘ. ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর উপর অবশ্যই ব্যাংক এ যোগাযোগ নাম্বার ও ঠিকানা থাকতে হবে। ম্যানেজার বা অনুমোদিত কর্মকর্তার স্বাক্ষর+সীল থাকতে হবে। ব্যাংক স্টেটমেন্টে এ্কাউন্ট নাম্বারটি স্পস্ট হতে হবে। কোন একজন ব্যক্তি ব্যাংক স্টেটমেন্টে ১২০০০টাকা দেখিয়েছিলেন, উনি ভিসা পাননি, আমার মতে ২০,০০০টাকা বা তার বেশী দেখাতে পারলে ভাল হয়।
ঙ. ফর্ম জমাদেওয়ার পর অফিস থেকে আপনাকে একটি রিসিট পেপার দিবে, এটা হারাবেন না, এটাতে আপনার ভিসা পাওয়ার তারিখ উল্লেখ থাকবে, কিন্তু এই ভাবে উল্লেক থাকবে যে Delivery Not Before 30-Oct-2012. আপনি আপনার ভিসা পাওয়ার তারিখের আগের দিন অনলাইনে Check Visa Status এ ক্লিক করে দেখে নিন যে আপনার ভিসা under processing দেখাচ্ছে কিনা, যদি এটা দেখায়, তাহলে বুঝবেন যে আপনার ভিসা এখনও হয়নি।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment